fbpx
কিভাবে সরকারি চাকরী পাবেন!

কিভাবে সরকারি চাকরি পাবেন!

Last Updated on January 26, 2023 by Engineers

কিভাবে সরকারি চাকরি পাবেন!

চাকরি বলতেই আমরা সাধারনত বুঝি সরকারি চাকরি। একটা সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আর নিশ্চিন্ত জীবনের জন্য সবার যেন প্রথম চাহিদা বা ইচ্ছা হচ্ছে সরকারি চাকরি। সরকারি চাকরি পেলে মনে হয় জীবনটি সেটেল হয়ে যাবে আর বাকিটা জীবন খুব ভালো ভাবেই কাটানো যাবে। কিন্তু বাস্তবতা কি ততটা সহজ?

প্রতিনিয়তই প্রতিযোগীতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবাই তার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে একটা সরকারি চাকরি ব্যবস্থা করতে কিন্তু সবাই কাংক্ষিত লক্ষ্য পৌছাতে পারে না সঠিক দিক নির্দেশনা আর গাইডলাইনের অভাবে।

তাই আজকে আমরা দেখব কিভাবে বা কোন উপায়ে প্রস্তুতি নিলে আপনি সহজেই একটা সরকারি চাকরি ম্যানেজ করতে পারবেন অথবা আপনার সরকারি চাকরির প্রতিযোগীতা সহজ হবে।

১। একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করুনঃ

প্রথমেই একজন সরকারি চাকরি প্রত্যাশী যে ভুলটি করে তা হল, যে কোন প্রকার পরিকল্পনা ছাড়াই পড়াশুনা শুরু করে। যা একটি বিশাল ভুল। একটি সরকারি চাকরির পোষ্টের বিপরীতে অসংখ্য লোক চেষ্টা করে থাকে। বুঝতেই পারছেন বিষয়টি কতটা প্রতিযোগীতা পূর্ন। তাই এই প্রতিযোগীতা পূর্ন বাজারে টিকে থাকার জন্য আপনাকে প্রথম থেকেই একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে। কিভাবে পড়বেন, কতটুকু পড়বেন বা কোথায় থেকে পড়বেন। সব কিছু পূর্ণ পরিকল্পপনা মাফিক আগাতে হবে। পরিকল্পনা বিহীন জীবন পালহীন নৌকার মত। সবাই আমরা জানি।

২। ধীরে ধীরে পড়ার সময় বৃদ্ধি করুনঃ

পড়াশুনা শুরু করার পর একজন ছাত্র এই মনভাব নিয়ে পড়াশুনা করে যে আজই সব পড়ে শেষ করে ফেলব। প্রথম দিন ৮ ঘন্টা পড়ার পর মাসের বাকি ২৯ দিন বইয়ের সাথে কোন সম্পর্কই আর থাকে না। এমন অনিয়মিত ভাবে পড়াশুনা করলে কখনোই ফলপ্রসু ফলাফল আসবে না। আর আপনি একদিনে সব পড়ে শেষ ও করতে পারবেন না। তাই যে বিষয়টি আপনাকে করতে হবে তা হচ্ছে ধীরে ধীরে আপনার পড়ার সময় বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিদিন ধীরে ধীরে আপনার অধ্যায়নের সময় বৃদ্ধি করুন। দেখবেন এতে একসময় আপনি অনেক দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশুনা করতে পারছেন।

 ৩। লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়াশুনা করুনঃ

ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করে বাসার চেয়ে লাইব্রেরিতে গিয়ে অনেক বেশি পড়াশুনা করা সম্ভব। লাইব্রেরিতে গেলে দেখা যায় অনেক মানুষ পড়াশুনা করছে সবাই কত ডেডিকেটেড আর ফোকাস হয়ে পড়াশুনা করছে। যা দেখলে নিজের আরো পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। এবং সেখানে অনেক মেধাবী ছাত্রদের সাথেও পরিচয় হয় যারা আপনাকে পড়াশুনা করার জন্য অনেক অনুপ্রাণিত করে। তাই আমি মনে করে লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়াশুনা করতে পারলে আপনার জন্য অনেক ফলপ্রসু হবে। তাই যদি সম্ভব হয় বাসায় না থেকে লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়াশুনা করতে পারেন নিজের সুবিধার জন্য।

৪। ফেসবুক থেকে দূরে থাকুনঃ

যদিও বিষয়টি খুব হাস্যকর মনে হয় কিন্তু আপনি যদি সত্যি জীবনে কিছু করতে চান বা কোন ভালো যায়গায় জব করতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া তথাকথিত ফেসবুক থেকে দূরে থাকতে হবে। ফেসবুক আমাদের অনেক সময় নষ্ট করে। একটা জরিপে দেখা গেছে একজন মানুষ দৈনিক ৪ থেকে ৫ ঘন্টা ফেসবুকে নষ্ট করে। তো চিন্তা করে দেখুন আপনি দৈনিক কত মূল্যবান সময় ফেসবুকে নষ্ট করছেন। তাই যদি সত্যি সরকারি জব পেতে চান তাহলে ফেসবুকে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ধ্যান জ্ঞান শুধু মাত্র আপনার লক্ষ্য কে কেন্দ্র করে আগাতে হবে। যদি এমনটি করতে পারেন তবে নিশ্চিত রূপে তার ফলাফল পাবেন। তাই এখন থেকেই অনার্থক সময় নষ্ট করা বন্ধ করুন।

৫। সকল সার্কুলারে এপ্লাই করুনঃ

অনেক সময় আমরা সার্কুলার দেখে এপ্লাই করি। এটা করব না সেটা করব না। এই মন্ত্রনালয়ে এপ্লাই করব না সেই মন্ত্রনালয়ে এপ্লাই করব না। এই ধরনের মন মানষিকতা পরিহার করুন। আপনার হাতের সামনে যেই সার্কুলারই আসুক না কেনো। সেটাতেই এপ্লাই করুন আর ১০০% দিয়ে চেষ্টা করুন। অন্তত ভাইবা বোর্ড পর্যন্ত যদি যেতে পারেন তবে দেখবেন আপনার কনফিডেন্স বৃদ্ধি পাবে। এবং এইভাবেই ধীরে ধীরে করে নিজেকে তৈরি করতে পারবেন নিজেকে। কোন কিছুকেই ছোট করে দেখা যাবে না। সব কিছুই মূল্যবান পৃথিবীতে। তাই সকল চাকরীকে সমান ভাবে প্রাধান্য দিন। দেখবেন এতে করে আপনি আপনার নির্দিষ্ট লক্ষ্যতে পৌছাতে পারবেন।

৬। মাঝ পথে হাল ছেড়ে দিবেন নাঃ

অনেক চেষ্টা করার পরেও দেখলেন ভাইবা থেকে বাদ পরলেন আর এজন্য সকল প্রস্তুতি বাদ দিয়ে দিলেন। এই ভুল কখনোই করবেন না। যত যাই হোক শেষ দেখে ছাড়বেন। এই ধরনের মন মানসিকতা রাখবেন। মাঝ পথে হাল ছেড়ে দেওয়ার মত বোকামি আর কিছু নেই। তাই আট ঘাঠ বেধে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করুন। দেখবেন আপনার ডেডিকেশন এক সময় আপনাকে আপনার সফলতা এনে দিবে। হাল ছেড়ে দেয় কাপুরুষেরা। বীরের মত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

৭। রুটিন মাফিক পড়াশুনা করুনঃ

দৈনিক পড়াশুনার একটা রুটিন করে ফেলুন। আমি সব সময় মনে করি রুটিন মাফিক পড়াশুনা করা ছাড়া কখনোই বেগ পাওয়া সম্ভব না। তাই একটা রুটিন তৈরি করুন এবং সেই রুটিন মাফিক পড়াশুনা করতে থাকুন। কোন অবস্থাতেই রুটিনের বাহিরে যাবেন না। যদি মাসের ৩০ দিনই রুটিনের ভিতরে থেকে পড়াশুনা করতে পারেন তবে নিশ্চিত রুপে সেটা আপনার জন্য ফলপ্রসু হবে।

৮। ম্যাথ এবং ইংরেজীতে বেশি জোর দিনঃ

যদি প্রতিটা জবের ভাইবা তে পৌছাতে চান এবং চাকরি নিশ্চিত করতে চান তবে আপনাকে ম্যাথ এবং ইংরেজীতে অনেক জ্ঞান রাখতে হবে। প্রচুর প্রেক্টিস করতে হবে। সাধারনত চাকরি তারাই পায় যারা ম্যাথে সম্পূর্ন নাম্বার পায়। ম্যাথে যদি আপনি ১০০% নাম্বার নিশ্চিত করতে পারেন তবে নিশ্চিত রুপে আপনি অনেক এগিয়ে থাকবেন। ইংরেজী প্রশ্ন যদি রিটেন আসে তবে কিছুটা হলেই নাম্বার পাবেন কিন্তু অংক যদি সঠিক না হয় তবে আপনি কোন নাম্বার পাবেন না। তাই প্রথমত ম্যাথ তারপর ইংরেজীতে সর্বচ্চো জোর দিন।

৯। হতাশ হওয়া যাবে নাঃ

অনেক চেষ্টা করার পরেও দেখলেন ভাইবা থেকে বাদ পরলেন। তাই বলে যেন হাল ছেড়ে দিব তেমনটি যেন না হয়। কোন অবস্থাতেই অতীত কে চিন্তা করে বর্তমানকে নষ্ট করা যাবে। অতীত সর্বদাই অতীত। জীবনের নামই সংঘর্ষ। থেমে যাওয়া বা হেরে যাওয়ার নাম জীবন নয়। আপনাকে বাচতে হবে আপনার জন্য। তাই আপনার নিজের জীবনকে নিজেরই সুন্দর করে তুলতে হবে। তাই কোন রকম ভাবেই হতাশ হওয়া যাবে না। হতাশা আমাদের বর্তমানকে নষ্ট করে দেয়। কোন রকম ভাবেই বর্তমান কে অতীতের গ্লানি দিয়ে নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না। আপনাকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বর্তমান এবং ভবিষ্যকে সুন্দর করার জন্য।

এই ইট কাঠের শহরে সঠিক ভাবে বেচে থাকার জন্য একটা সরকারি চাকরি খুবই জরুরী। কিন্তু এই কঠিন প্রতিযোগীতাপূর্ণ সময়ে একটা সরকারি চাকরি ম্যানেজ করা কতটা কঠিন সেটা সব বেকারই জানে। কিন্তু ভালো থাকার জন্যই এত চেষ্টা তাই আমাদের সবাইকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। চেষ্টা কখনোই বিফলে যায় না। আশা করি আপনারা আপনাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন আর নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছে যাবেন।

 

ক্যারিয়ার টিপস (Career Tips): যা আপনাকে ভবিষ্যতে চাকরি পেতে সহায়তা করবে।

যেভাবে নিজেকে আরো যোগ্য করে তুলবেন চাকরির জন্য

চাকরি খোঁজার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ওয়েবসাইট

ইন্টারভিউয়ের প্রস্তুতি এবং ২৫টি কার্যকরী টিপস