fbpx
করোনা সুরক্ষা ডিভাইস

করোনা সুরক্ষায় ইন্টার পড়ুয়া শিক্ষার্থীর প্রতিরোধমূলক সুরক্ষা ডিভাইস উদ্ভাবন

Last Updated on January 26, 2023 by Engineers

করোনা সুরক্ষায় ইন্টার পড়ুয়া শিক্ষার্থীর প্রতিরোধমূলক সুরক্ষা ডিভাইস উদ্ভাবন

পথে হাটতে গিয়ে হঠাৎ করেই হোচট খেয়ে পড়লে যেমন তাৎক্ষণিক ব্রেনের ইশারায় চোখের নিরাপত্তার জন্য চোখ বন্ধ হয়ে যায়, তেমনি এই যন্ত্র সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে তার ফেস শিল্ডের মাধ্যমে।

বলছিলাম ইন্টার পড়ুয়া নবীন বিজ্ঞানী অপূর্ব মজুমদারের নব উদ্ভাবিত করোনায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করন যন্ত্রের কথা। যার নাম “বঙ্গ সোশ্যাল ডিসটেন্স ব্রেকিং অ্যালার্ট কিট উইথ অ্যাডভান্স শার্টার টেকনোলজি “।

চলুন জেনে নেওয়া যাক তার কাছ থেকেই তার যন্ত্রের যাদুকথা-

অপূর্ব মজুমদার নামে এক কলেজছাত্র তৈরি করেছেন কোভিড-১৯ (করোনা) প্রতিরোধমূলক করোনা সুরক্ষা ডিভাইস । অপূর্ব তার ডিভাইসটির নামকরণ করেন ‘বঙ্গ সোস্যাল ডিসটেন্স ব্রেকিং অ্যালার্ট কিট উইথ অ্যাডভান্স শার্টার টেকনোলজি’। এটি একটি কোভিড ১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধমূলক সুরক্ষা ডিভাইস।  যা মাক্স এর পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
করোনা সুরক্ষা ডিভাইস
ইন্ডিয়ান ক্লিনিক অব মেডিকেল রিচার্সের (আইসিএমআর) এক গবেষণায় দেখা গেছে- সঠিকভাবে সামাজিক দূরত্ব না মেনে চললে একজনের থেকে ৪০৬ জন করোনা সংক্রমিত হতে পারেন। আর যদি দূরত্ববিধি ৭৫ শতাংশ মানা হয় সেক্ষেত্রে একজন রোগী থেকে মাত্র আড়াইজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এজন্য করোনা বিস্তার রোধে পদক্ষেপ হিসেবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। সে লক্ষ্যে অপূর্ব মজুমদার ডিভাইসটি তৈরি করেন।
ডিভাইসটি মূলত সামাজিক দূরত্ব (৩ফুট) বজায় সাহায্য করে।হেলমেটের সঙ্গে এ সংযুক্ত করা হয়েছে ডিভাইসটি। এটি মাক্স এবং পিপিই এর পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ডিভাইসটি পরিহিত ব্যক্তির ৪০ ইঞ্চি বা ১.১মিটার  কোনো মানুষ অতিক্রম করলেই ডিভাইসটির সঙ্গে সঙ্গে  তা অনুধাবন করতে পারে। এবং তাৎক্ষণিকভাবে হেলমেটের সঙ্গে সংযুক্ত ডিভাইসটি অত্যাধুনিক ফেস শিল্ড ব্যবহার করে  মুখমন্ডল ঢেকে দেবে। এতে করে চক্ষু ,নাক এবং মুখ সুরক্ষিত থাকবে হাঁচি কাশি জনিত এয়ার পার্টিকেল থেকে।একই সঙ্গে ডিভাইসটির সঙ্গে সংযুক্ত করিছি আর্টিফিসিয়াল ভয়েস অ্যালার্ট ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব অতিক্রম করলেই ডিভাইসটি পরিধানকারী, সামাজিক দূরত্ব অতিক্রমকারী ও আশেপাশের মানুষকে সতর্ক বার্তা প্রদান করবে।
সতর্ক বার্তা টি হলো:
“মাস্ক পরিধান করুন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন। নিয়মিত ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত হাত ধৌত করুন।
– জনস্বার্থে বঙ্গ সোশ্যাল ডিসটেন্স ব্রেকিং অ্যালার্ট কিট উইথ অ্যাডভান্স শার্টার টেকনোলজি।গ্যাজেটটি উদ্ভাবনে অপূর্ব মজুমদার”
ডিভাইসটি ব্যবহারকারীর সামনে কোনো ব্যক্তি যতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে ততক্ষণ সুরক্ষা দিতে পারবে। এছাড়া সামনের ব্যক্তি সরে যাওয়ার পর সর্বোচ্চ এক মিনিট পর্যন্ত শিল্ডটি মুখমন্ডল ঢেকে রাখবে। তাছাড়া এতে সংযুক্ত করা হয়েছে “ওয়ার্ক মুড”নামের একটি অপশন যা  ডিভাইস পরিধানকারীকে কন্টিনিয়াসলি সুরক্ষা দিতে সক্ষম। তাছাড়াও ডিভাইসটিতে আরো সংযুক্ত করা হয়েছে,
১.বিল্ট ইন ব্লুটুথ সুবিধা রয়েছে। যা সচেতনতা বৃদ্ধিমূলকসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যাবে। ২.ওয়্যারলেস ভয়েস ট্রান্সমিশন সিস্টেম যা ডিভাইসটি ব্যবহারীকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় কথা বলতে সাচ্ছন্দ্য দিবে।
৩.উন্নতমানের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি সংযুক্ত ডিভাইসটি এক চার্জে টানা তিনদিন ব্যবহার করা যাবে।
৪.সাধারণ মুঠোফোনের চার্জার কিংবা সোলার দিয়েও ডিভাইসটি চার্জ দেওয়া যাবে।
৫.এটি একটি পরিবেশবান্ধব ও সহজে হস্তান্তর যোগ্য ডিভাইস।
৬.রেডিও সুবিধাও রয়েছে।
৭.সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে। ৮.ডিভাইস থেকে মোবাইল চার্জের সুবিধাও রয়েছে।
ডিভাইসটি চাইলে আরো কাষ্টমাইজ করা সম্ভব।
ডিভাইসটির আবিষ্কারকরণ গবেষণায় প্রায় অপূর্ব মজুমদারের ৬মাস ২৫ দিনের মতো সময় ব্যয় হয়েছে। ডিভাইসটির কাজ শুরু হয় জানুয়ারি ২০২১তারিখ থেকে।ডিভাইসটি আবিষ্কারকরণে সে ১৫ বারের মতো ব্যর্থ হয়। এবং প্রায় ৭বারের মতো বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং যান্ত্রিক কলাকৌশল পরিবর্তন করে।
ডিভাইসটির তৈরিতে খরচ হয় ২০০০টাকার মতো। কিন্তু গবেষণা শুরু থেকে শেষ করতে তার প্রায় ১০হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।তবে এটি বাণিজ্যিক উৎপাদন করলে ৮০০থেকে ১০০০টাকার মতো পড়বে।
ডিভাইসটির ব্যবহার:
এটি মাঠ পর্যায়ের কর্মরত ব্যাক্তি, জরুরী বিভাগে কর্মরতসহ করোনা রোগী সর্বপরি জনসাধারণ ব্যবহার করতে পারবেন।এটি ব্যবহারকারী বান্ধব হওয়ার যে কেউ খুব সহজে এটি ব্যবহার করতে পারবেন।এটির ব্যবহার শিক্ষন এর জন্য কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণ এর প্রয়োজন নেই।